ওয়েবসাইট বানাতে কত টাকা খরচ হতে পারে? ফ্রি ওয়েবসাইট কীভাবে বানানো যায়? | Techtunes
[ad_1]
আসসালামু আলাইকুম টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভাল আছেন। বরাবরেই মত আজকেও চলে এসেছি নতুন টিউন নিয়ে।
প্রযুক্তির অগ্রগতির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করা এখন অনেক সহজ। এখন ওয়েবসাইট তৈরি করতে অনেক টাকা দিয়ে ডেভেলপার হায়ার করতে হয় না এমনকি চাইলে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যেও একটি চমৎকার ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলা যায়।
কিন্তু ওয়েবসাইট তৈরি করার আগে আপনাকে জানতে হবে, আপনি কী ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করবেন কী কাজে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন। এবং সেটা করতে আপনার কত টাকা খরচ পড়বে। তো আজকের এই টিউনে আমরা আলোচনা করব একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে আপনার কেমন খরচ হতে পারে এবং কিভাবে ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন।
টিউন শুরু করার আগে আপনাকে ওয়েব সাইট তৈরি সম্পর্কে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে,
- আপনি যদি কাস্টম ডোমেইন চান তাহলে সেটা আপনাকে কিছু ডলারের বিনিময়ে কিনতে হবে
- আপনার ওয়েবসাইট হোস্ট করার জন্য সার্ভার কিনতে হবে, ফ্রিতে হোস্টিং পাওয়া গেলেও সব ক্ষেত্রে সেগুলো উপযুক্ত নয়।
- ওয়েব প্ল্যাটফর্ম বাছাই করার আগে আপনাকে জানতে হবে কোন প্ল্যাটফর্মের কাজ কী? e-commerce, portfolio, documentations, কাজের জন্য আলাদা আলাদা প্ল্যাটফর্ম বাছাই করতে পারেন।
- যখন ডেভেলপার হায়ার করবেন তখন অবশ্যই বিস্তারিত আলোচনা করে নিন
সব সময় ডেভেলপার হায়ার করা, ডোমেইন কেনা, হোস্টিং কেনার ক্ষেত্রে অযথা অর্থ ব্যয় না করে বিভিন্ন ডিসকাউন্ট বা অফার বাছাই করতে পারেন এতে খরচ কিছুটা কামানো যেতে পারে।
তো আজকে আমরা ওয়েব সাইট তৈরি সম্পর্কিত সকল বিষয় পরিষ্কার করব, কোন টুল ব্যবহার করতে হবে, কি ধরনের প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করবেন সব কথা হবে।
ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি
আপনি যখন ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চাইবেন তখন আপনাকে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। আপনি যখন ফ্রি হোস্টিং এর অফার পাবেন তখন,
- ওয়েবসাইটের লোড স্পীড কম হতে পারে
- বিভিন্ন ফিচারে রেস্ট্রিকশন থাকতে পারে
- আপনার ডোমেইনে কখনো সিকিউরিটি রিস্ক থাকতে পারে
সুতরাং আমাদের রেকোমেন্ডেশন হচ্ছে ফ্রিতেই যদি ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে বিশ্বাস যোগ্য কিছু প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেগুলো ট্রাই করুন। নিচে কিছু বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম তুলে ধরা হল।
Blogger
Blogger হচ্ছে গুগলের একটি প্ল্যাটফর্ম যা দিয়ে সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে আপনি একটা ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারবেন। এখানে আপনি বিভিন্ন Post, কাস্টমাইজ ডিজাইন, প্রি-বিল্ড থিম ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। ভিজিটরদের ইনসাইট সহ ওয়েবসাইটকে মনিটাইজ করার ব্যবস্থাও আছে এখানে।
Blogger, ওয়েবসাইট তৈরি করলে আপনাকে হোস্টিং নিয়ে ভাবতে হবে না। আপনি এখানে ফ্রিতে আনলিমিটেড হোস্টিং পেয়ে যাবেন। আপনার ওয়েবসাইটে ডোমেইন হবে xyz.blogpost.com অথবা xyz.com যদি কাস্টম ডোমেইন কিনে নেন। ব্লগারের মাধ্যমে আপনি ব্লগ ওয়েবসাইট, নিউজ ওয়েবসাইট এবং পোর্টফলিও ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। ভাল থিম ব্যবহার করে খুব সহজেই এখানে ওয়েবসাইটের প্রফেশনাল লুক দেয়া যায়।
WordPress.com
WordPress.com অনেকাংশে Blogger এর মতই তবে এখানে স্টোরেজের লিমিট রয়েছে। এখানে প্রিমিয়ামে অনেক ফাংশন পেলেও ফ্রিতে ব্যাসিক ফাংশনালিটি পাবেন। যেমন আপনি আপগ্রেড করলে ওয়েবসাইটে পেমেন্ট অপশন যোগ করতে পারবেন।
আপনি যদি ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তাহলে WordPress.com ব্যবহার করতে পারেন। এখানে আপনি ব্লগার থেকেও বেশি ফিচার পাবেন। আর প্রিমিয়াম প্ল্যান নিলে তো কথাই নেই।
GitHub পেজ
ডেভেলপাররা তাদের প্রজেক্ট প্রোমোট করার জন্য, GitHub Page ব্যবহার করে। যেকেউ চাইলেই GitHub Pages ব্যবহার করে ওয়েবসাইট তৈরি বা হোস্ট করতে পারে।
GitHub মূলত আপনাকে লার্নিং ওয়েবসাইট অফার করবে, সবাই এতে সন্তুষ্ট নাও হতে পারে। আপনার হাতে সময় থাকলে একবার ট্রাই করে দেখতেই পারেন।
ওয়েবসাইট তৈরি করার পেইড মেথড
আপনার কাজের ধরন পরিধির উপর নির্ভর করে আপনার ওয়েবসাইট ভিন্ন হতেই পারে। ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফিচার দরকার পড়তে পারে, সেক্ষেত্রে পেইড মেথড এর বিকল্প নেই।
ওয়েব হোস্ট ব্যবহার করা
আপনি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট বানাতে একটি ওয়েব হোস্টিং বাছাই করতে পারেন সেক্ষেত্রে আপনাকে প্রতি মাসে কম হলেও ৩ ডলার পে করতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি একটি উপযুক্ত শেয়ারড হোস্টিং নিতে পারবেন। তবে হোস্টিং নেবার আগে অবশ্যই আপনাকে একটি ডোমেইন কিনতে হবে। এক্সটেনশনের উপর ভিত্তি করে দাম কম বেশি হতে পারে। যেমন. Com ডোমেইন আপনি সাধারণত ১০/১৫ ডলারের মধ্যে পেয়ে যাবেন।
ওয়েবসাইট ইন্সটল করার জন্য একাধিক CMS রয়েছে যেমন WordPress, OpenCart, ইত্যাদি। চাহিদা অনুযায়ী আরও অনেক প্ল্যাটফর্ম পাওয়া যায়। CMS বাছাই করার পর আপনি যদি নিজে ডিজাইন না করতে চান তাহলে একটি থিম কিনে নিতে পারেন। ১৫ থেকে ৬৫ ডলারের মধ্যে আপনি ভাল মানের একটি থিম পেয়ে যাবেন। বেশি দাম দিয়ে কিনলে বেশি সাপোর্ট এবং ফিচার আশা করতে পারেন। তাছাড়া এখানে আপনি ব্যাক এন্ডে ওয়েবসাইট ম্যানেজ করার সুযোগ পাবেন।
বর্তমানে হোস্ট ওয়েবসাইটের মধ্যে WordPress সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। প্রায় সব ধরনের ওয়েবসাইট এখানে তৈরি করা যায়। রয়েছে আনলিমিটেড কাস্টমাইজেশনের সুবিধা। যেকোনো কাজে পাওয়া যায় বিভিন্ন প্লাগইন।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে আপনি প্রথম মাসের হোস্টিং সহ মাত্র ৩০-৪০ ডলারে ওয়েবসাইট পেয়ে যাচ্ছেন। তবে বার্ষিক প্ল্যান নিলে আপনার খরচ কিছুটা কমে আসতে পারে।
তবে আপনি যদি নিজে নিজে ব্যাক এন্ডে ম্যানেজ করতে না চান তাহলে, Cloudways এর মাধ্যমে প্রতি মাসে ১০ ডলার দিয়ে ওয়েবসাইট শুরু করতে পারেন।
আপনি এই খরচ গুলো ছাড়া বিভিন্ন add-ons/plugins, ও ব্যবহার করতে পারেন যেমন CDN সার্ভিস বিভিন্ন সিকিউরিটি সার্ভিস ইত্যাদি। বলা যায় সব মিলিয়ে বার্ষিক ১০০ ডলারে মোটামুটি চলে যাবে। যেমন ওয়ার্ড-প্রেসের বিভিন্ন প্রিমিয়াম প্লাগ-ইন ব্যবহার করতে আপনাকে ভাল একাউন্ট খরচ করতে হতে পারে। যাই হোক আপনি এডভান্সড কিছু চাইলে প্রতি বছর ৫০০ ডলারের উপরেও খরচ করতে পারেন, এটা আপনার উপর নির্ভর করবে।
ওয়েবসাইট বিল্ডার
আপনি যদি ওয়েব হোস্টিং না চান এবং ব্যাক এন্ডের ঝামেলায় জড়াতে না চান তাহলে প্রি-মেইড বিল্ডার ব্যবহার করতে পারেন যেমন, WordPress.com, Wix.com ইত্যাদি। Wix.com এ আপনি মাসিক ১৪ ডলার দিয়ে ওয়েবসাইট শুরু করতে পারবেন যেখানে WordPress.com মাসে ৪ ডলার দিলেই হবে। তবে একটা কথা মাথায় রাখবেন ওয়েবসাইট বিল্ডার দিয়ে আপনি সব ফিচার পাবেন না।
ডেভেলপার হায়ার করা
আপনার যদি হোস্টিং, ডোমেইন, এবং ওয়েবসাইট তৈরির সময় না থাকে এবং এসব কিছু কম বুঝেন তাহলে ডেভেলপার হায়ার করতে পারেন। তবে ডেভেলপার হায়ার করতে উপরের যেকোনো মেথড থেকে আপনাকে বেশি টাকা খরচ করতে হবে। ভাল মানের ডেভেলপার প্রতি ঘণ্টার জন্য ৩০-৪০ ডলার পর্যন্ত চার্জ করতে পারে।
একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে সব মিলিয়ে আপনাকে এক বছরের জন্য ৫০০ ডলার পর্যন্ত দেয়া লাগতে পারে তবে এর পর যদি আপনি নিজেই মেইনটেইন করেন তাহলে খরচ নেই। নিজে মেইনটেইন না করলে একই একাউন্ট খরচ হবে। কখনো কখনো বিভিন্ন বাগ দেখা দিলে সেক্ষেত্রেও আপনাকে ডেভেলপারের কাছে যেতে হবে।
আপনি যখন কোন কোম্পানির জন্য বড় মাপের কোন ওয়েবসাইট বানাতে চাইবেন তখন ডেভেলপার হায়ার করতে পারেন। কারণ সব কিছু তখন নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
শেষ কথা
আপনি ওয়েবসাইটের পেছনে কত টাকা খরচ করবেন এটা নির্ভর করবে আপনার রিকুয়ারমেন্ট এর উপর। সাধারণ কাজে আপনি বছরে ১০০ ডলার খরচ করতে পারেন। তবে আপনার বিনিয়োগ যদি বড় মাপের হয় তাহলে ডেভেলপার দিয়েই ওয়েবসাইট বানিয়ে নিন।
তো আজকে এই পর্যন্তই পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভাল থাকুন আল্লাহ হাফেজ।
[ad_2]