অধরা খুদে গল্প - Sportsbd
[ad_1]
খুদে গল্প:অধরা
বনফুল
অন্ধকারে একা ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম মাঠে। সে-ও সঙ্গে ছিল না। তার অঙ্গসৌরভ, বলয়-নিক্কণ, নিঃশ্বাসের মৃদু শব্দ সমস্তই অনুজ করছিলাম । পাশাপাশি ছিল, অতিশয় কাছাকাছি। আমারও মুখে কথা ছিল না, তারও না আলাপ বন্ধ ছিল না তবু । দুজনেই কথা কইছিলাম কিন্তু নীরবে তার সমস্ত অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ পরিস্ফুট হয়ে উঠেছিল আমার কল্পনায় তাই যখন নীরব ভাষায় সে আমাকে প্রশ্ন করলে- আমাকে তুমি তো কখনো দেখনি, তবু চাইছ কেন এত করে?
তখন আমি অসংকোচে উত্তর দিলাম- তোমাকে আমি জানি ।
কী করে জানলে?
কী করে তা জানি না, কিন্তু জানি ।
নিবিড়তর হয়ে উঠল অন্ধকার ।
পাশাপাশি হাঁটলাম অনেকক্ষণ ….কতক্ষণ মনে নেই মনে হচ্ছিল শতাব্দীর পর শতাব্দী পার হয়ে যাচ্ছে । … সহসা তার আর একটা
নীরব প্রশ্ন সঞ্চারিত হলো আমার মনে ।
এত করে চাইছ যদি নিচ্ছ না কেন?
ধরা দিলে কই?
মদিরতর হয়ে উঠল তার অঙ্গ-সৌরভ ।
মনে হলো তার চকিত দৃষ্টির চাহনি বিদ্যুতের মতো চিরে চলে গেল অন্ধকারকে চতুর্দিকে বিদ্যুতায়িত হয়ে উঠল ক্ষণকালের জন্য।
সর্বদা ধরে রেখেছ, তবু বলছ ধরা দিইনি ।
আমি যেখানে চাই সেখানে দাওনি ।
কোথায় চাও?
ইন্দ্রিয়ের ইন্দ্রলোকে ।
দ্রুততর হয়ে উঠল তার নিঃশ্বাস! স্পন্দিত হয়ে উঠল অন্ধকার…মনে হলো খুব কাছে সরে এসেছে… তার চোখের জল গালে পড়ল
আমার … এক ফোঁটা জল [ … বরফের মতো ঠাণ্ডা
সহসা সচেতন হলাম, বৃষ্টি পড়ছে। বাড়ির দিকে ফিরলাম। সে-ও চলেছে । মুষলধারা নামল । ছুটছি… সে-ও ছুটছে সঙ্গে সঙ্গে। সহসা অতিশয় কাছে এসে পড়ল যেন…. তার ভিজে শাড়ির স্পর্শ পেলাম মনে হলো পাশাপাশি ছুটে চলেছি নির্জন পথ ঊর্ধ্বশ্বাসে পার হলাম নীরবে । তারপর সুদীর্ঘ গলিটা । নীরন্ধ্র অন্ধকার গলির শেষে আমার প্রকাণ্ড নির্জন বাড়িটা দৈত্যের মতো দাঁড়িয়ে আছে এখনই গ্রাস করবে আমাকে। দ্রুতপদে বারান্দায় উঠলাম। সে-ও উঠল ঘরে ঢুকলাম, সে-ও ঢুকল সুইচ টিপলাম। তাড়াতাড়ি- তীব্র আলোয় ভরে উঠল চতুর্দিক । দেখি, কেউ নেই।
source: পুথিনিলয় বই
এই কন্টেন্ট এর সারবস্তু গৃহীত হয়েছে © পুঁথি নিলয় বই প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিত থেকে নেওয়া হয়েছে।
[ad_2]