বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল ও দ্রুত করার পদ্ধতি (2022)
[ad_1]
বেশ কিছু হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল রয়েছে। আপনার হাতের লেখা যেন কোনোভাবেই “কাকের ঠ্যাঙ, বকের ঠ্যাঙ” তকমা না পায় আর যেন দ্রুত লেখা হয় তারই ৭টি উপায় চলুন দেখে নেয়া যাক কিভাবে হাতের লেখা সুন্দর করা যায়:
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল ১: নির্বাচন করুন লেখার সঠিক সরঞ্জাম
- শিশুর জন্য অবশ্যই ভালো মানের পেন্সিল-রাবার এবং লেখার জন্য প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম নির্বাচন করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় হাতে পেন্সিলের দাগ হয়ে যায় কিংবা রাবার দিয়ে পরিষ্কারভাবে লেখা মুছে ফেলা যায় না। এই বিষয়গুলো শিশুকে লিখতে নিরুৎসাহিত করতে পারে।
- সাদা কাগজ না দিয়ে শিশুকে লাইন টানা খাতা দেয়াটাও একটি হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল। এতে বর্ণ লেখা এবং লাইন সোজা রাখা শিশুর জন্য তুলনামূলক ভাবে সহজ হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে লাইন গুলো যেন খুব বেশি ঘন না হয়। প্রথম দিকে বড় করে লেখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে ভুলগুলো সহজেই চোখে পড়বে এবং শিশু সহজে শুধরেও নিতে পারবে।
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল ২: দেহের অবস্থান ঠিক রাখা
দেহের সঠিক অবস্থান লেখার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। লেখার সময় টেবিল চেয়ার ব্যবহার এবং লেখার স্থানে পর্যাপ্ত আলোর উপস্থিতি আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। পিঠ সোজা করে, পা মেঝের সমতলে রাখতে হবে। প্রায় দেখা যায় অনেকে খাতার পাশে হাত বাঁকা করে লেখে। এটি ঠিক নয়। হাত ও কবজিকে নমনীয় রেখে আঙ্গুলগুলো দিয়ে লিখতে হবে।
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল ৩: সঠিকভাবে পেন্সিল/কলম ধরা
সুন্দর হাতের লেখা আয়ত্ত করার জন্য পেন্সিল কিংবা কলম ধরার কিছু নিয়ম আছে। দুটোই ধরতে হবে বৃদ্ধাঙ্গুলি, তর্জনী এবং মধ্যমা দিয়ে। অনেককেই দেখা যায় অনেক শক্ত করে কলম ধরেন, অথবা অনেক জোর প্রয়োগ করে লিখে থাকেন। এটি হাতের লেখা খারাপ হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। তাই কলমটিকে হালকা করে ধরতে শিখুন এবং অল্প জোর প্রয়োগ করুন।
লেখার সময় পেন্সিল খুব শক্ত করে ধরা বা অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এতে করে যেমন সময় অপচয় কম হয় তেমনই লেখা সুন্দর হয়। সেই সাথে হাতের পেশীকে নমনীয় রাখতে হবে এবং বাহু ও কবজিকে সমান অবস্থানে রাখতে হবে। এটি অন্যতম একটি হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়।
সুন্দর হাতের লেখা গড়ার কৌশল ৪: সঠিকভাবে অক্ষর লেখা
সুন্দর হাতের লেখা চাইলে বর্ণ বা অক্ষরগুলো লেখার সময় স্পষ্ট ও পরিষ্কারভাবে লেখার চেষ্টা করতে হবে। মাত্রাগুলোর দিকে বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। দুটি বর্ণের মাঝে প্রয়োজনীয় জায়গা রাখতে হবে। এক বর্ণের সাথে অন্য বর্ণ যেন লেগে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সেই সাথে দুই শব্দের মাঝেও প্রয়োজনীয় জায়গা রাখতে হবে। অনেক বেশি ফাঁকা রাখলে যেমন দেখতে ভালো লাগে না তেমনই খুব ঘন ঘন লিখলেও লেখা হিজিবিজি মনে হয়।
বর্ণের আকৃতি ঠিক রাখাটাও জরুরি। একটি বর্ণ ছোট, আরেকটি বর্ণ বড় এমন হলে লেখা সুন্দর হয় না। সেই সাথে দুটি লাইন সমান্তরাল হওয়াটাও জরুরি। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়।
অনেক শিশুর বাংলা হাতের লেখা তুলনামূলকভাবে খারাপ হয়। বাংলা বর্ণে বক্রতা এবং বৈচিত্র্য অনেক বেশি থাকায় শিশুদের তা শিখে নিতে একটু সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণ, মাত্রা ও অর্ধমাত্রা, বক্রতার দিকটা বিশেষ ভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনে ডট লাইনের ওপর হাত ঘুরিয়ে অনুশীলন করা যেতে পারে।
|
হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় ৫: বুঝতে হবে শিশুর মনস্তত্ত্ব, সৃষ্টি করতে হবে উৎসাহব্যঞ্জক পরিবেশ
বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে একটি সুন্দর পরিবেশ অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শেখার একটি উৎসাহমূলক পরিবেশ থাকলে তারা ভুল করতেও দ্বিধান্বিত হয় না বরং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও দ্বিগুণ উৎসাহে এগোতে থাকে। লেখার ক্ষেত্রেও এরকম একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ভুল হলে, লেখা খারাপ হলে বা লেখা দ্রুত না হলে অযথা বকাঝকা না করে উৎসাহ দিতে হবে। এতে শিশু মনে সাহস পাবে আর খুব দ্রুত শিখেও ফেলবে।
লেখা সুন্দর না হওয়ার অন্তর্নিহিত অন্যান্য কারণও থাকতে পারে। মনোযোগহীনতা, আত্মবিশ্বাসের অভাব ইত্যাদির কারণে শিশুর লেখা খারাপ হতে পারে। এক্ষেত্রে সেই সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধান করার ব্যবস্থা করাটাই হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়। কোনোভাবেই শিশুকে অবমাননা করা যাবে না।
হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় ৬: মোটর দক্ষতা (Motor Skill) বৃদ্ধি
মোটর দক্ষতা (Motor Skill) হলো, শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পরিচালনা করার ক্ষমতা। অনেক সময় দেখা যায় শিশুর মোটর দক্ষতা পরিপূর্ণভাবে বিকাশ লাভ করে না, যার কারণে লেখা খারাপ হয়। স্নায়ুতন্ত্র, মস্তিষ্ক এবং পেশী- এই তিনের সঠিক সমন্বয়ে মোটর দক্ষতা পরিপূর্ণতা লাভ করে। কাপড় ভাঁজ করা, কাগজ কাটা, চামচ ব্যবহারের মত সহজ কাজগুলো শিশুর মোটর দক্ষতা বিকাশে ভূমিকা রাখে।
মোটকথা, হাত পরিচালনা করতে হয় এমন যে কোন কাজই সুন্দর হাতের লেখা গড়তে প্রভাব রাখে। আর এর জন্য মোটর দক্ষতাটা একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল। কেননা এর মাধ্যমে লেখার যে কোন উপাদান (যেমন: পেন্সিল) ধরা এবং হাত দিয়ে তা পরিচালনা করার দক্ষতা বৃদ্ধি পায় যা বর্ণ লিখতে সাহায্য করে। পাজল মিলানো, আঁকিবুকি করা, বিভিন্ন ইনডোর ও আউটডোর খেলাধুলাও এক্ষেত্রে সাহায্য করে।
হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় ৭: অনুশীলন, অনুশীলন এবং অনুশীলন
সুন্দর হাতের লেখা একটি শীল্প। হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল হিসেবে তাই অনুশীলনের বিকল্প নেই। একই কথা প্রযোজ্য লেখা দ্রুতকরণের ক্ষেত্রেও। বেশি বেশি হাতের লেখা অনুশীলন করার মাধ্যমে লেখা সুন্দর হবে, হবে দ্রুতও।
আজকাল শিশুর কাছে লেখালিখির বিষয়টি আকর্ষণীয় করে তোলাও খুব বেশি কঠিন নয়। কেননা এখন অনেক ধরনের ওয়ার্কশিট এবং লেখা অনুশীলন করার বিভিন্ন সরঞ্জাম পাওয়া যায়। প্রয়োজনে সুন্দর হাতের লেখা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল -গুলোর ব্যাপারে একটু যত্নবান হলে বা নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে খুব সহজেই কাঙ্ক্ষিত লেখা পাওয়া সম্ভব। এখন আমরা দেখব কিভাবে হাতের লেখা সুন্দর করা যায় ও আপনার পরীক্ষার খাতা পরিচ্ছন্ন রাখা যায় এই বিষয়ক কিছু টিপস।
বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করার উপায়: কিছু টিপস
বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় | ||
সুন্দর হাতের লেখার কৌশল | ব্যখ্যা | |
১ | জায়গা রাখুন | জায়গা রাখুন- পাশের আসনে বন্ধুর জন্য নয়, ‘শব্দ থেকে শব্দ’ এবং ‘লাইন থেকে লাইনের’ মাঝে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ সুন্দর হাতের লেখার কৌশল। হাতের লেখা যতই খারাপ হোক, শিক্ষক যেন আপনার লেখা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারেন। |
২ | আকর্ষণীয় মার্জিন | আপনার খাতার পুরো নকশাই বদলে দিতে পারে একটি সুন্দর মার্জিন। এজন্য ব্যবহার করতে পারেন নীল রঙের সাইন-পেন। অথবা, পেন্সিল/ নীল কালি দিয়েই মার্জিন টানুন তবে পাশাপাশি দু’টো দু’টো করে দাগ দিন। |
৩ | নীলের স্পর্শ | একটু কষ্ট করে হলেও, অবশ্যই আপনার লেখাতে দুই রঙের কালি ব্যবহার করে লিখুন। শিক্ষকরা অনেক অনেক খাতা মূল্যায়ন করেন। তাই পুরো লেখা পড়ে দেখার ধৈর্য তাঁদের থাকে না। এখানেই সুযোগ পেয়ে যায় সুন্দর হাতের লেখা এর অধিকারী মানুষগুলো। আপনার লেখাটিও যেন এর মধ্যে সঠিকভাবে মূল্যায়ন হয়, তাই গুরুত্বপূর্ণ শব্দ/বাক্যগুলো নীল কালি দিয়ে লিখুন যেন শিক্ষক অন্তত এটুকু বুঝেন যে আপনি ‘কিছু তো একটা’ লিখেছেন! |
৪ | দাগ দিন | একবার কালো কলম, একবার নীল কলম, এরপর আবার কালো কলম – এভাবে লিখতে অসুবিধা বোধ করলে একটানে কালো কালিতে লিখে যান। লেখা শেষ করে গুরুত্বপূর্ণ শব্দ/বাক্যগুলোর নিচে নীল কালি দিয়ে দাগ টেনে দিন। |
৫ | (‘’) এর ব্যবহার | হয়ত খেয়াল করেছেন যে কয়েকটি শব্দ আমি (‘’) এই চিহ্নটির মাঝে লিখেছি। হাতের লেখা খারাপ হওয়ার সুবাদে শিক্ষক বিরক্তি নিয়ে আপনার খাতা দেখবেন। এতে করে গুরুত্বপূর্ণ লেখা গুলো হয়ত তাঁদের চোখে পড়বে না। তাই অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন পুরো লেখা না পড়লেও, প্রধান পয়েন্টগুলো তাঁদের চোখে পড়ে। |
৬ | পয়েন্ট করে লিখুন | পয়েন্ট ব্যবহার করে লিখুন। এতে করে আপনার লেখাটা যেমন গঠনমূলক হয়, তেমনই আপনার যুক্তিগুলো সুনির্দিষ্টভাবে ফুটে উঠে। |
৭ | অনুচ্ছেদ করুন | অর্থাৎ, ইংরেজিতে যেটাকে বলে ‘প্যারা’ করে লেখা। কিছু কিছু বিষয়, যেমন, বাংলা ১ম ও ২য় পত্রতে পয়েন্ট করে লেখা যায় না। সেই ক্ষেত্রে আপনি এক একটি অনুচ্ছেদ আকারে আপনার মতামতগুলো উপস্থাপন করতে পারেন। |
৮ | উদাহরণ দিন | আপনার লেখার মূল্য ততই ভারী হবে আপনি যতই তাতে উদাহরণ দিতে পারবেন। আপনি যে বিষয়টি ‘বুঝে’ লিখেছেন তা আপনার দেওয়া উদাহরণেই ফুটে উঠে। |
৯ | একটানে ভুল সংশোধন | কোন শব্দ বা বাক্য ভুল হলে সেটাকে হিবিজিবি করে না কেটে, শুধু একটি হালকা দাগ দিয়ে কেটে দিন। আবার বলছি, শুধু ‘একটি’ দাগ; একটি ‘হালকা’ দাগ। আপনার কাটাকাটির অংশটি যেন প্রাধান্য না পায় কোনভাবেই! |
গতি ধরে রেখে সুন্দর হাতের লেখার কৌশল
ধরুন আপনি একজন নিয়মিত ছাত্র। ক্লাসে শিক্ষকদের কথা মনোযোগ দিয়ে গুনে থাকেন, টেন মিনিট স্কুলের ভিডিও টিউটোরিয়াল ও লাইভ ক্লাসগুলো সবসময়ই দেখেন, বাসায় প্রচুর প্র্যাকটিস করনে এবং আপনার পরীক্ষার সিলেবাসে যা যা আছে তার সবই আপনি পারেন।
এই আত্মবিশ্বাস নিয়েই আপনি পরীক্ষা দিতে গেলেন এবং প্রশ্নপত্র হাতে পেয়ে দেখলেন— আসলেই আপনি যা যা পড়ে এসেছেন সবগুলোই কমন এসেছে। সবগুলো প্রশ্নের উত্তর আপনি পারেন! কেমন লাগবে আপনার? নিশ্চয় অনেক ভালো।
কিন্তু পরীক্ষা শেষে আপনি দেখলেন ১০০ নম্বরের পরীক্ষায় আপনি মাত্র ৭০ নম্বরের উত্তর লিখতে পেরেছেন, বাকি ৩০ নম্বর আপনাকে ছেড়ে দিতে হয়েছে। কারণ, পরীক্ষার নির্ধারিত সময় শেষ! শুধু হাতের লেখা দ্রুত না বলে জানা প্রশ্নের উত্তরগুলোও আপনি লিখতে পারেননি। এবার কেমন লাগবে আপনার? খুব একটা ভালো লাগার কথা না।
পরীক্ষায় দ্রুত লিখতে পারাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার শেষের দিকে এসে সেটা আমরা (যারা দ্রুত লিখতে পারি না তারা) সবাই অনুধাবন করি। শুধু পরীক্ষাতেই না; ক্লাসে শিক্ষকদের লেকচার নোট করার সময়, বিভিন্ন লেখালেখির প্রতিযোগিতায় শুধু লেখার গতি কম থাকার জন্য পিছিয়ে পড়তে হয় বারবার। তাই কীভাবে লেখার গতি একটু বাড়ানো যায় সেটা নিয়েই কয়েকটি কথা বলছি।
সুন্দর হাতের লেখা -কে দ্রুত করার কৌশল | ||
১ | হাতের লেখার ফন্ট ছোট করে ফেলা | আমরা অনেকেই তুলনামূলক বড় বড় অক্ষরে লেখি এবং আমাদের লেখার দ্রুততা কমার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী এই জিনিসটাই। কীভাবে এটা লেখার গতি কমায়? ধরুন, প্রথমে আমি খাতার আস্ত একটি পৃষ্ঠা নিয়ে ‘আ’ লেখলাম, তারপর অর্ধেক পৃষ্ঠা নিয়ে লেখলাম এবং সবশেষে খাতার এক কোনায় ছোট্ট করে লেখলাম; কোনটায় সবচেয়ে বেশি সময় লাগবে বলে মনে হয়? অবশ্যই প্রথমটিতে, তারপর দ্বিতীয়টিতে এবং সবচেয়ে কম সময় লাগবে খাতার এক কোনায় ছোট করে লেখলে। তাই এটা বলাই যায় যে— লেখার ফন্ট ছোট হলে লেখার দ্রুততা বাড়ে। এটা ঠিক যে বড় করে লিখলে লেখার সৌন্দর্য একটু বাড়ে বৈ কি কিন্তু সেই সাথে দ্রুততাও কিন্তু কমে। তাই লেখার ফন্টের সাইজ মাঝামাঝি করা গেলে লেখার সৌন্দর্য ও গতি দু’টোই ঠিক থাকবে। |
২ | নিয়মিত প্র্যাকটিস করা | বছরের বিভিন্ন সময়ে আমরা স্কুল থেকে লম্বা ছুটি পেয়ে এখানে-সেখানে বা আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে চলে যাই। এই ছুটির দিনগুলো বই একটু নেড়েচেড়ে দেখা হলেও খাতা মোটেও খুলে দেখা হয় না। এ কারণে লেখাও হয় না। আর দীর্ঘদিন না লেখার ফলে লেখার ধারও কমে যায়। তাই বন্ধের এই সময়গুলো দিনে ন্যূনতম এক পৃষ্ঠা লেখার চেষ্টা করা উচিৎ। বইয়ের পড়া লেখতে ভালো না লাগলে ‘আজ সারাদিন কী করলাম’ বা দু-একটি গল্প, কবিতা, রচনা লেখার চেষ্টা করতে পারেন। এতে করে নিজের সৃজনশীলতা বা সৃষ্টিশীলতাও যেমন বাড়বে ঠিক তেমনি লেখার চর্চাও থাকবে। |
৩ | যা শিখেছ তা মাথায় না রেখে খাতায় রাখুন | যা শিখেছ তা খাতায় লেখ’— বড়দের কাছ থেকে এই একটি কথা আমরা এত বেশি পরিমাণে শুনি যে পরবর্তীতে এটাকে আর খুব একটা গুরুত্ব দেই না। কিন্তু হাতের লেখা সুন্দর ও দ্রুত করার জন্য এর চেয়ে ভালো উপায় আর হতেই পারে না। কোন পড়া শেখার পর সেটা লেখে ফেললে সেই পড়া ভুলে যাবার সম্ভাবনাও অনেক কম। এ ছাড়া ঘড়ি ধরে লেখা গতি মাপতে হবে। যেমন স্টপওয়াচ দিয়ে দুই মিনিটে কতগুলো শব্দ লেখা যায় তা গুনে ফেলতে হবে; তার পরের বার চেষ্টা করতে হবে আগের চেয়ে অন্তত একটি শব্দ বেশি লেখার। এভাবে বারবার অনুশীলন করলে নিজের যোগ্যতার সর্বোচ্চ পর্যন্ত অ্যাচিভ করা সম্ভব। |
৪ | ব্যাকরণে ভাল দখল রাখা | বাংলা অথবা ইংরেজি লেখার সময় ব্যাকরণ সঠিক ভাবে জানা না থাকলে ‘এটা’ হবে নাকি ‘ওটা’ হবে চিন্তা করে আমরা একটু হলেও সময় নষ্ট করি। এবং এতে করে লেখার গতিও ব্যাহত হয়। যেমন: বাংলায় ‘কি’ এবং ‘কী’ এর ব্যবহার প্রচুর। এছাড়া ইংরেজিতে ‘Its’ ও ‘It’s’ এর ব্যবহারও প্রচুর। এর সঠিক ব্যবহার যদি না জানি তাহলে বারবার থামতে হবে এবং লেখায় ভুলও বেশি হবে। সুতরাং ব্যাকরণগত এই খুঁটিনাটি গুলো অবশ্যই জানা উচিৎ। |
৫ | বানানে ভালো হওয়া | বাংলা ও ইংরেজিতে কিছু শব্দ আছে বেশ কনফিউজিং। যেমন: বাংলায় ‘খোঁজা’/‘খোজা’ বা ‘বাক’/‘বাঁক’ শব্দের বানানে গোলমাল লেগে যাওয়া খুব স্বাভাবিক। এছাড়া ইংরেজীতে ‘Pen’/‘Pan’ বা ‘Hare’/‘Here’/‘Hair’ ইত্যাদি শব্দগুলোর পার্থক্য না জানা থাকলে লেখার সময় বারবার থেমে থেমে চিন্তা করতে হয় এখানে ‘এটা’ হবে নাকি ‘ওটা’ হবে। যা লেখার গতি কমায়। এছাড়া ‘কিংকর্তব্যবিমূঢ়’ বা ‘Lieutenant’ এর মত একটু কঠিন শব্দগুলোর বানানও শিখে নেয়া জরুরী। |
পরীক্ষায় লেখা শেষ করার কৌশল
পরীক্ষার হল থেকে বেরিয়ে “ইশ, আরেকটু যদি সময় পেতাম!” এই আফসোস আমাদের অনেকেরই। কিন্তু টাইম ম্যানেজমেন্টও পরীক্ষারই একটি অংশ। একটি ভাল পরীক্ষার পেছনে আপনার প্রস্তুতি কেমন সেটির ভূমিকা ৫০%, পরীক্ষার হলে কোন Strategy অনুসরণ করেছেন তার ভূমিকাও কিন্তু ৫০%!
সাধারনত গণিত কিংবা ইংরেজি এর মতো বিষয়গুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করা গেলেও, বর্ণনামূলক বিষয়গুলো শেষ করতে হিমশিম খেতে হয় অনেককেই। ফলে অনেক ভালো প্রস্তুতি নেয়া সত্ত্বেও আশানুরূপ ফলাফল করতে পারি না আমরা, হতাশায় ভুগতে থাকি।
তাই নির্ধারিত সময়ের ভেতর কীভাবে সব লেখা শেষ করা যায়, চলুন জেনে নেই কিছু কৌশল!
পরীক্ষার প্রথম পাঁচ মিনিট
প্রথম পাঁচ মিনিট খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়। এই সময়টি হাতে রাখতে হবে শুধু প্রশ্ন পড়ার জন্য। এরকম বহুবার ঘটেছে যে হয়তো প্রশ্নে ছোট করে লেখা আছে “পাঁচটি থেকে যেকোন তিনটি উত্তর করতে হবে” কিন্তু সেটি খেয়াল না করায় পাঁচটিই উত্তর করে অনেক সময় এবং শ্রম স্রেফ অপচয় হয়েছে! তাই প্রশ্ন পড়ার ক্ষেত্রে কোন অবহেলা নয়। এই সময়ে তোমাকে তিনটি কাজ করতে হবে:
- কয়টি প্রশ্নের মধ্যে কতোগুলোর উত্তর করতে হবে সেটি মনোযোগ দিয়ে দেখা।
- কোন প্রশ্নগুলোর উত্তর করা তোমার জন্য সহজ, কোনগুলো কঠিন সেটি মনে মনে যাচাই করে নেওয়া।
- প্রশ্নগুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে এমনভাবে পড়া, যেন একই প্রশ্ন দ্বিতীয়বার পড়া না লাগে।
(এখন বেশিরভাগ পরীক্ষাতেই প্রশ্নে দাগ দেওয়া নিষিদ্ধ। কিন্তু যদি এই বিধিনিষেধ না থাকে- প্রশ্নের মূল বিষয়গুলো পেনসিল দিয়ে দাগিয়ে নিলে অনেক উপকার হবে।)
সময় ভাগ করে নেয়া
প্রশ্ন পড়া শেষ, মানসিক একটা প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছেন কীভাবে কী লিখবেন সে ব্যাপারে। এবার সময় ভাগ করে নেওয়ার পালা। মনে করুন সাতটি সৃজনশীল প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ আড়াই ঘণ্টা বা ১৫০ মিনিট। তাহলে প্রত্যেক প্রশ্নের জন্য ২০ মিনিট করে ১৪০ মিনিট। বাকি ১০ মিনিট থাকবে শুরুতে ৫ মিনিট প্রশ্ন পড়তে আর শেষ ৫ মিনিট রিভিশন দিতে।
আপনি আপনার সুবিধামতো অন্যভাবেও ভাগ করতে পারেন সময়। যে প্রশ্নটিতে অনেক কিছু লেখার আছে সেটি পাঁচ মিনিট বেশি সময় নিয়ে লিখলে, যেটির উত্তরে আপনার তেমন কিছু জানা নেই তার পেছনে বেশি সময় খরচ করার মানে হয় না।
সময় শুধু ভাগ করলেই চলবে না, সেটিকে ঠিকভাবে মেনে প্রত্যেকটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে! সাধারণত কী হয়: আমরা প্রথম প্রশ্নের উত্তর অনেক যত্ন করে অনেক সময় নিয়ে লিখি এবং শেষে এসে সময় থাকে না তখন খাতার উপর রীতিমতো ঝড় চলতে থাকে! খাতার প্রথম পৃষ্ঠা আর শেষ পৃষ্ঠা পাশাপাশি দেখতে গেলে এটি যে একই মানুষের লেখা সেটি বুঝতে কষ্ট হয়!
সুন্দর ও দ্রুত ইংরেজি হাতের লেখা
এই কোর্সটি থেকে যা শিখবেন
সবচেয়ে সহজ প্রশ্ন দিয়ে শুরু করা
যে প্রশ্নটি আমরা ভাল পারি (সোজা কথায় বলতে গেলে ‘কমন’ পড়েছে যে প্রশ্নটি!) সেটির উত্তর করতে কম সময় লাগে। তাই সহজ প্রশ্নগুলোর উত্তর শুরুতেই করে ফেলুন। এতে আপনার আত্মবিশ্বাস যেমন বেড়ে যাবে, যিনি আপনার খাতা দেখবেন তার মনেও আপনার সম্পর্কে একটি ভাল ধারণা তৈরি হবে। সহজ প্রশ্নগুলো দ্রুত শেষ করে ফেললে শেষে কিছু অতিরিক্ত সময় পাওয়া যাবে যা কঠিন প্রশ্নগুলো ভেবে চিন্তে লেখার কাজে ব্যবহার করা যাবে।
নিয়মিত লেখার অভ্যাস তৈরি
পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় সবাই বই পড়ি প্রচুর, প্রস্তুতি নিতে পড়ার বিকল্প নেই। কিন্তু লিখে অনুশীলন করি কয়জন? না লেখার ফলে যে সমস্যাটি হয়- পরীক্ষার হলে লেখা গতি বেশ কম থাকে অভ্যাসের অভাবে, হাত ব্যথা হয়ে যায়। অনেকের লেখার লাইন আবার রেল লাইনের মতো বেঁকে যেতে থাকে। বিচ্ছিরি অবস্থা!
পরীক্ষায় সময় স্বল্পতার কারণে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে এগুলো মনের উপর আরও বেশি চাপ তৈরি করে। দেখা যায় উত্তর খুব ভালোভাবে জানা কিন্তু ঠিকমতো লেখা হয়ে উঠে না! তাই আমরা যখন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবো, তখন পড়ার পাশাপাশি একটু কষ্ট করে সময় নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো লিখেও অনুশীলন করবো। তাহলে হাতের লেখা যেমন ঝরঝরে, সুন্দর আর দ্রুত হবে, তেমনি পয়েন্টগুলোও আরো ভালোভাবে মনে গেঁথে যাবে।
ঘন ঘন ঘড়ির দিকে না তাকানো
ঘন ঘন সময় না দেখে চেষ্টা করতে হবে প্রত্যেক প্রশ্ন শেষ করে ঘড়ির দিকে তাকানো। যদি নিজের অজান্তেই বারবার চোখ ঘড়ির উপর আটকে যায় তবে হাতের ঘড়ি খুলে টেবিল এর উপর রেখে দিতে পারো। খেয়াল রাখতে হবে, সময়ের দিকে অতিরিক্ত নজর দিতে গিয়ে সময় যাতে নষ্ট করে না ফেলি!
পরীক্ষা চলাকালীন বিরতি না নেয়া
পরীক্ষার মাঝে বোতলে পানি ভরা, টয়লেটে যাওয়া ইত্যাদি কাজে যাতে সময় নষ্ট না হয় এজন্য এসকল কাজ পরীক্ষা শুরুর আগেই শেষ করে নিতে হবে। এছাড়া প্রয়োজনীয় সকল জিনিসপত্র সাথে রাখতে হবে, যাতে কারো কাছে চেয়ে দুজনেরই সময়ের অপচয় না ঘটে।
উদ্বিগ্ন হলে চলবে না
পরীক্ষার হলে কোনভাবেই উদ্বিগ্ন হওয়া যাবে না। দুশ্চিন্তা করলেন তো হেরে গেলেন! দেখা যায় একটা প্রশ্নের উত্তর ঠিকমতো মেলাতে না পারলে মাথা গরম হয়ে যায়, তখন বাকি প্রশ্নগুলোর উত্তরও খারাপ হতে থাকে!
একটু যদি ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করএন – একটা প্রশ্নের উত্তর নিয়ে দুশ্চিন্তা করে আপনার যে সময়টা নষ্ট হচ্ছে সে সময়ে আপনি আরেকটা প্রশ্নের পাঁচটা লাইন বেশি লিখতে পারতেন, পাঁচটা মার্কস বেশি পেতেন!
অনেকে আবার একটি কাজ করেন, পরীক্ষা দিয়ে এসে কয়টি নৈর্ব্যক্তিক মিলেছে, কয়টি প্রশ্ন সঠিক হয়েছে সেগুলো মেলাতে শুরু করেন। অথচ এই সময়টিতে পরের পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার কথা ছিলো, আপনি আগের পরীক্ষা নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করছেন। এরচেয়েও দুশ্চিন্তার ব্যাপারটি হলো আপনার নৈর্ব্যক্তিক ইত্যাদি মেলাতে গিয়ে যদি দেখেন অনেক ভুল হয়েছে- তখন আপনার মনটা খারাপ হয়ে যাবে, আত্মবিশ্বাস কমে যাবে। পরীক্ষার মৌসুমে আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলার চেয়ে ভয়াবহ আর কিছু হয় না!
তাই সবসময়, Focus on “WHAT’S NEXT?”
যা হয়ে গেছে তা যেতে দাও। সব দিন সমান যায় না। কিছু ভাল যাবে, কিছু খারাপ হবে এটাই স্বাভাবিক। নতুন দিন, নতুন পরীক্ষা, নতুন চ্যালেঞ্জ!
সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো!
বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করতে কোর্স
বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল শেখাতে টেন মিনিট স্কুল নিয়ে এসেছে “সুন্দর ও দ্রুত বাংলা হাতের লেখা” কোর্স। এই কোর্স আপনার সন্তানের বাংলা হাতের লেখা নিয়ে সকল সমস্যার কার্যকর সমাধান হিসেবে কাজ করবে।
কোর্সটি বিশেষভাবে বাচ্চাদের বাংলা হাতের লেখার দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য তৈরি করা হয়েছে, যাতে তারা হাতের লেখায় দক্ষতা অর্জনের জন্য যা কিছু করা দরকার তা একদম শুরু থেকেই বুঝতে পারে এবং একই সাথে বাংলা হাতের লেখা চর্চা করতে পারে।
এই কোর্সটি থেকে যা শিখবেন
- দ্রুত বাংলা হাতের লেখা সুন্দর করার কৌশল।
- স্বরবর্ণ ও ব্যঞ্জনবর্ণের প্রতিটি অক্ষর ব্যবহার করে শব্দ গঠনের উপায়।
- পূর্ণমাত্রা, অর্ধমাত্রা, মাত্রাবিহীন ও যুক্ত বর্ণ সহজে লেখার নিয়ম।
- ১০টি কার, ৬টি ফলা ও বিরাম চিহ্নের পরিচিতি।
তাই আপনার কিংব আপনার সন্তানের হাতের লেখা সুন্দর করতে এখনই এনরোল করে ফেলুন এই কোর্সে!
[ad_2]