কিভাবে মোবাইল দিয়ে প্রফেশনলাভাবে ফটো এবং ভিডিও এডিট করা যায়
কিছু কথাঃ
আসসালামু আলাইকুম সকলে কেমন আছেন আশা করি ভাল আছেন আমিও ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি দুর্দান্ত একটি টিপস পোস্ট নিয়ে। জেনে খুশি হবেন যে আর্টিকেলটি মূলত অ্যান্ড্রয়েড ইউজারদের জন্য। আমরা যারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ইউজ করি তারা জানি যে ফটো এবং ভিডিও এডিট করা কতটা কষ্টকর। যারা ফটো এবং ভিডিও এডিট এর কাজ করেন তারা হয়তো প্রতিদিন অনেক টাকা খরচ করেন এর পিছনে। কিন্তু আমরা যদি সহজ কিছু টিপস শিখে নেয় তাহলে হয়তো অনেক টাকা বেঁচে যাবে। তাই আমি আপনাদের জন্য এই আর্টিকেল নিয়ে এসেছি এই আর্টিকেল থেকে জানতে পারবেনকিভাবে মোবাইল দিয়ে প্রফেশনলাভাবে ফটো এবং ভিডিও এডিট করা যায়
যেমন প্রফেশনাল ফটো এবং ভিডিও এডিটর রা করে থাকে।
এই আর্টিকেল থেকে কি কি জানতে পারবেন তা হল:
১. মোবাইলে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করার কয়েকটি অসাধারণ সফটওয়্যার এবং কিভাবে করবেন তার ব্যাখ্যা
২. মোবাইল দিয়ে ফটো এডিট করার অসাধারন কিছু ফ্রি সফটওয়্যার এবং কিভাবে কাজ করবেন তার সমস্ত আলোচনা
মোবাইলে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করার কাজ
প্রথমে আমরা শিখব কিভাবে মোবাইলে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করা যায়। তবে এর জন্য আমাদের কিছু অ্যাপস এ প্রয়োজন যা আপনি ফ্রিতে পেয়ে যাবেন গুগোল এ। কোন কোন অ্যাপস এবং কিভাবে কাজ করবেন তা নিয়েই এই ধাপটি আলোচনা করব তবে আপনাকে ধৈর্য ধরে পড়তে হবে।
মোবাইলে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করার জন্য পাঁচটি অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করবো যা দ্বারা আপনি প্রফেশনাল ভিডিও বানাতে পারবেন বা এডিট করতে পারবেন এবং কোনটা দিয়ে কোন ধরনের ভিডিও এডিট করার জন্য বেস্ট হবে।
তো চলুন শুরু করা যাক।
KineMaster:-
এখন আমি আপনাদের জন্য যেই এপটির কথা বলব সেটি হচ্ছে কাইনমাস্টার। অনেকে হয়তো নামটা শুনেছেন কিংবা শোনেননি। আপনি যদি মোবাইল দিয়ে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করতে চান তাহলে KineMaster অ্যাপটি বেছে নিতে পারেন। কারণ কাইনমাস্টার অ্যাপ টি দিয়ে প্রায় 90 শতাংশ প্রফেশনাল ভাবে এডিট করা যায়। আপনি যদি ইউটিউবার হন তাহলে আপনার জন্য এই অ্যাপটি বেস্ট হবে কারণ এই অ্যাপটির দ্বারা আপনি শর্ট ফিল্ম মিউজিকে ব্যাকগ্রাউন্ড এড করা বিভিন্ন ধরনের কাজ করতে পারবেন। এই অ্যাপটির অনেক ফিচার রয়েছে এখন সেই ফিচারগুলো নিয়ে আমরা কথা বলব। তো জেনে আসি ফিচার গুলো কি কি,,,,
আমরা জানি যে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও এডিট করার জন্য কম্পিউটার প্রয়োজন কিন্তু আমরা যদি কাইনমাস্টারের ফিচারগুলোর দিকে লক্ষ্য করি তাহলে প্রায় কম্পিউটারের সব ধরনের কাজ কাইনমাস্টার দ্বারা সম্ভব। আপনি চিন্তাও করতে পারবেন না যে কাইনমাস্টার দ্বারা মোবাইল দিয়ে অনেক ভালোভাবে ভিডিও এডিট করা যায়। এটি দ্বারা আপনি বিভিন্ন ভিডিও ব্যাকগ্রাউন্ড সহজেই সরিয়ে নিতে পারবেন এবং আপনার ইচ্ছামতো যেকোনো ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড নিমিষেই লাগাতে পারবেন। অ্যাপটি দ্বারা আপনি অডিও এডিটিং কালা রেন্ডারিং , মাল্টি লেয়ার এবং সব ধরনের কাজ করতে পারবেন। মোবাইলে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করার জন্য এই অ্যাপটি সবচেয়ে বেস্ট। তাহলে এখনি ডাউনলোড করে নিন অ্যাপটি এবং কাজ করা শুরু করে দিন। এবং কিভাবে কাজ করবেন তা ইউটিউবে অনেক ধরনের টিউটোরিয়াল রয়েছে সেগুলো থেকে ধারণা নিতে পারেন।
তারপর আপনাদের জন্য যে এপটির কথা বলব সেটি হচ্ছে
video show:-
সোশ্যাল মিডিয়াতে আমরা প্রতিনিয়ত দেখে থাকি যে বিভিন্ন ধরনের উইশ ভিডিও তৈরী করা হয় এবং যার দ্বারা বন্ধু-বান্ধবদের উইশ করা হয়। আমাদের হয়তো ইচ্ছে করে যে এরকম একটি ভিডিও বানিয়ে বন্ধু-বান্ধবদের চমকে দেওয়া। এরকম ভিডিও বানানোর জন্য এটি অনেক বেস্ট একটি অ্যাপ। এই অ্যাপ দ্বারা আপনি খুব সহজেই উইস ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এখন আপনি যদি ফিচারের কথা বলেন তাহলে বলব একবার ব্যবহার করে দেখুন এবং সবগুলো ফিচার উপভোগ করেন। আপনি যদি স্লাইড শো ভিডিও তৈরি করতে চান তাহলে আপনি এই অ্যাপটি কে প্রথমে বেছে নিবেন কেননা এটি দ্বারা প্রায় সব রকমের স্লাইড শো ভিডিও তৈরি করা যায়। এখন আপনি হয়তো স্লাইডশো ভিডিও তৈরি করে ফেলেছেন এখন আপনি যদি ইচ্ছা করেন তাহলে এই স্লাইড শো ভিডিওগুলো তে যে কোন ধরনের ফিল্টার ব্যবহার করতে পারেন এবং অনেক ধরনের ফটো ব্যবহার করতে পারেন।যা আপনার ভিডিওগুলোকে আরো প্রফেশনাল তৈরি করবে। এখন আপনি যদি ভিডিওর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মিউজিক এড করতে চান তাহলে এই অ্যাপটিতে রয়েছে অনেক ধরনের মিউজিক যে আপনি ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। তো এখনি ডাউনলোড করুন এবং একটি ভিডিও তৈরি করে ফেলুন এবং আপনার বন্ধু বান্ধবদের চমকিয়ে দিন।
Adobe premier:-
আমরা সকলেই জানি যে প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করার জন্য এডবি সফটওয়্যারগুলো কতটুকু দুর্দান্তকর। যদি প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করার কথা বলা হয় তাহলে এই অ্যাপ গুলো প্রথম লিস্টে থাকবে। যদি আমরা মোবাইলে এই অ্যাপ গুলো ব্যবহার করি তাহলে তো আরো ভালো। আপনি যদি ইউটিউবার হন এবং ইউটিউবে ট্রাভেলিং ভিডিওগুলো পাবলিশ করে থাকেন তাহলে এই অ্যাপটি আপনার জন্য অবশ্যই দরকার। এডোবি ক্লিপ দ্বারা ট্রাভেলিং ভিডিও প্রফেশনাল ভাবে এডিট করা যায় আপনার ভিডিওর মান অনেক বেড়ে যাবে। এই অ্যাপটিতে অটোমেটিক ট্রানজেকশন ফিচার রয়েছে যে আপনার ভিডিওতে অটোমেটিকলি এড হয়ে যাবে এবং আপনার ভিডিওটি অনেক সুন্দর দেখাবে এবং আপনার ভিডিওতে অটোমেটিক গ্রাফিক্স চেঞ্জ হয়ে যাবে।
Power director:-
এখন কথা বলব অসাধারন আরো একটি আপনি।video edit এর জন্যে আরও একটি অসাধারণ এপ হচ্ছে power director.. এই অ্যাপ দ্বারা আপনি মোবাইলে সব ধরনের ভিডিও এডিট করতে পারবেন। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে তার কিছু ফিচার দেখে আসি, এই অ্যাপটি প্রায়ই কাইনমাস্টার এর মতই তবে কাইনমাস্টার এর চেয়ে অনেক বেস্ট। ট্রানজেকশন এফেকশন গ্রাফিক্সে ফিকশন সবগুলো ফিচার মিলিয়ে বলা চলে প্রফেশনাল ভিডিও এডিট করার জন্য সর্বোত্তম। এটি দ্বারা আপনি টাইটেল স্লো মোশন multi-layered সব ধরনের এডিটিং করতে পারবেন আমরা হয়তো সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেক ধরনের ফানি ভিডিও দেখে থাকি এই ভিডিওগুলো বেশিরভাগই মোবাইল দিয়ে এডিট করা হয়ে থাকে । তো তারা যেহেতু পারে আপনি কেন পারবেন না আপনাকে এই ভিডিওগুলো তৈরি করতে কাইনমাস্টার কিংবা পাওয়ার ডিটেক্টর এর প্রয়োজন। ইউটিউবে ভিডিও শেয়ারের শর্ত হচ্ছে কঁপিরাইট না করা সেজন্য কপিরাইট এড়াতে আপনি কাইনমাস্টার কিংবা এই এপ দ্বারা এডিট করে ভিডিও শেয়ার করতে পারেন। আপনি প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করতে চাইলে এই অ্যাপটি এখনি ডাউনলোড করে ভিডিও এডিট শুরু করতে পারেন।
আমি ইতোমধ্যে কয়েকটি অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করলাম যেগুলো দ্বারা আপনি প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করতে পারেন। তো এখানে শেষ নয় আরো একটি অ্যাপ নিয়ে আলোচনা করা বাকি রয়েছে এটি একটি দুর্দান্ত একটি অ্যাপ একবার ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবেন। তো কথা বলবে সেই অ্যাপটি নিয়ে প্রথমে জেনে নেই সেই অ্যাপটির নাম কি।
আমরা সকলেই চাই যে আমাদের একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকুক এবং সেখানে ভিডিও শেয়ার করে উপার্জন করি। এখানে ভিডিও শেয়ার করার আরেকটি নিস আমরা পছন্দ করে থাকি সেটি হচ্ছে ব্লগিং বর্তমানে প্রায় সবাই ব্লগ ভিডিওগুলো তৈরি করে থাকে। আপনি হয়তো ব্লক ভিডিওগুলো তৈরি করতে পারেন কিন্তু প্রফেশনাল মানের ভিডিও এডিট করতে পারেন না। প্রফেশনাল মানের ব্লগ ভিডিও এডিট করার জন্যই এখন কথা বলব। অ্যাপটির নাম হচ্ছে
Filmorago:-
আমি কিছুক্ষণ আগেই বললাম ব্লগ ভিডিও এডিট করার জন্য এই অ্যাপটি অত্যন্ত কার্যকর। আপনার ব্লগ ভিডিও গুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফিল্টার প্রয়োজন তাই এই অ্যাপটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফিচার সমৃদ্ধ ফিল্টার। এছাড়াও অ্যাপ টি তে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিউজিক যা আপনি ফ্রিতে আপনার ভিডিওতে ব্যবহার পারেন। এছাড়া মোশন গ্রাফিক্স ফিচারটি পারছেন। আপনি যদি ভিডিওতে থিম ব্যবহার করতে চান সে জন্য এখানে রয়েছে থিম ফিচার যা আপনার ক্যাটাগরি অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন। তো এখনই ডাউনলোড করতে পারেন অ্যাপ টি।
এই ধাপে মোবাইল দিয়ে প্রফেশনাল ভাবে ফটো এডিট করার জন্য রয়েছে অসাধারণ কিছু টিপস। আপনার কাছে হয়তো দামি ফোন বা ক্যামেরা নাও থাকতে পারে কিন্তু কিছু টিপস ব্যবহার করে কমদামি ফোন দিয়েও অসাধারণভাবে অনেক প্রফেশনাল ফটো এডিট করা যায় সেই বিষয় নিয়ে এইধাপে আলোচনা করবো। আমরা যারা মোবাইলে ফটো এডিট করতে ভালোবাসি বা পছন্দ করি বা অনেকেই হয়তো পারি না তাদের জন্য এই ধাপটি। সুন্দর ভাবে ফটো এডিট করার জন্য অবশ্যই পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন তো আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক
Picshot:
এটি অসাধারণ একটি ফটো এডিটিং অ্যাপস যারা নতুন কিংবা ফটো এডিটিং শিখতে চান তাদের জন্য এই অ্যাপটি বেস্ট হবে। এখানে রয়েছে অসাধারণ অনেক ইফেক্ট যেগুলো ব্যবহার করে আপনার ফটো কে নিমিষেই বিভিন্ন ইফেক্ট এর মাধ্যমে প্রফেশনাল ফটো তৈরি করে ফেলতে পারেন। এছাড়া ইফেক্ট ব্যবহার করার পর আপনি অনেক ধরনের কালার অ্যাড করতে পারেন। আপনার ফটোতে যদি ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করতে চান তাহলে এখান থেকে ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া ইনস্ট্যান্ট ব্যাকগ্রাউন্ড ইরেজ করতে পারেন। আপনার ফটো ব্লার করতে চাইলেও ব্লার করতে পারেন। এছাড়াও আরও রয়েছে নানান ধরনের ফিচার ডাউনলোড করে একবার ব্যবহার করেই দেখুন।
এখন আমি যে একটু কথা বলব সেটি হচ্ছে
photo Editor pro:
এই অ্যাপটির মাধ্যমে আপনি খুব সুন্দর ভাবে ফটো এডিট করতে পারবেন পূর্বের মতো এখানেও রয়েছে অসাধারণ ফিল্টার তবে এখানে সবগুলো ফিল্ডার আপনি ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন না কিছু ফিল্টার রয়েছে যেগুলো আপনি ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন আর বাকি সবগুলো পেইড বা কিনে ব্যবহার করতে হবে। আপনি কনট্রাস্ট বিউটি ব্রাইটনেস এগুলো কাস্টমাইজ করতে পারবেন। এই অ্যাপে আপনি নিয়ন স্পাইরাল এই ফিল্টার গুলো ফ্রিতে ব্যবহার করতে পারবেন। ফটোতে আপনি ড্র করতে পারেন বা আপনার নাম লিখতে পারেন। তো অ্যাপটি ভাল লাগলে ডাউনলোড করে একবার চেক করে নিতে পারেন।
এছাড়া আরো অনেক সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি মোবাইল ফোন দিয়েও প্রফেশনাল মানের ফটো ইডিট করতে পারবেন।