বিনোদন গল্প- ভাঙা বাড়ি(পার্ট-১)


 ঋতুটা বসন্তকাল, নতুন বাসায় উঠলাম তাই মনটা খুব ভালোই লাগছিলো। চারদিকে পাহাড়ি পরিবেশ আর বসন্তের বাতাসে শরীরটা ঠান্ডা লাগছিলো,তাই গায়ে চাদরটা জড়িয়ে বারান্দায় বসে দুপুরের রোদ পোহাচ্ছি।  আসলে এই বাসাটায় আমি আজ সকালে উঠেছি। দুতলা বাসা, নিচতলায় থাকি উপরের তলাটা খালি পড়ে আছে। বাড়ির মালিক বিদেশে থাকেন। ব্যাক্তিগত কোনো এক কারণে এখানে এসেছি।  বাসা ভাড়া চার হাজার টাকা। বাড়ির আশেপাশে তেমন কোনো বাড়ি নেই। বাড়ির দারোয়ান এসে বললো এখানে কোনো ধরণের সমস্যা না থাকলেও পাহাড়ি পরিবেশ থাকায় মাঝে মধ্যেই বিদ্যুৎ চলে যায়। কথাটা  শুনে চার্জার লাইটটা বের  করে চার্জ দিলাম। আমার কপালটাই খারাপ ছিলো চার্জে দেওয়ার পাঁচ মিনিট পরেই বিদ্যুৎ চলে গেলো,থাক এখন আর বসে না থেকে ঘরটা সুন্দর করে গোঁছিয়ে নিলাম, বাসায় উঠার আগে বাজার থেকে কিছু রুটি এবং শুকনো খাবার কিনে এনেছিলাম দুপুরে  খাওয়ার জন্য। সেগুলো খেয়েই দুপুরের ভোজনটা কোনোমতে শেষ করলাম।এর মাঝেই আাবার বিদ্যুৎ চলে আসলো। চার্জার লাইটটা সংযোগ দেওয়াই ছিলো তাই আগের মতোই আবার চার্জ হতে লাগলো।সকালের এবং দুপুরের খাবারটা হালকা হওয়ায় শরীরটা তেমন চলছিলোনা। তাই রাতে ভালো কিছু খাওয়ার জন্য বাজারে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলাম। বাড়ির সামনেই মেইনরোড তাই রিক্সা  বা অটোর জন্য অপেক্ষা করছি।বাসা থেকে বাজার ১৫ মিনিটের রাস্তা।কয়েক মিনিটপর মতো দাঁড়িয়ে থাকার পর হঠাৎ একটা রিক্সা এলো তাই রিক্সায় করেই বাজারে পৌঁছলাম।


বাজার করতে করতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিলো সেজন্য আর দেরি না করে বাড়ির জন্য রওয়ানা দিলাম। পাহাড়ি এলাকায় রাতের বেলা ভয়ে শরীরটা এমনিতেই ছমছম করে। বাসায় এসে চার্জার লাইটটা নামিয়ে রান্নাঘরে এলাম রান্না করার জন্য। আমি ভালো রান্না করতে পারিনা, আর এখানে এমন কোনো ভোয়া বা কর্মচারী নেই যে আমাকে রান্না করে খাওয়াবে। তাই কোনোমতে নিজেই রান্না করে নিলাম। রাতের খাওয়ার পর বিছানায় ঘুমায় গেলাম। সারাদিন কাজের পর খুব সহজেই গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। মাঝরাতে হঠাৎ শিয়ালের ডাকে গুম ভেঙে গেলো। চারপাশে ঘন জঙ্গল থাকায় বভিন্ন পশু পাখির গুঞ্জন খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছি। এসব শুনতে শুনতে নিজের অজান্তেই কখন যে ঘুমিয় পড়লাম বুঝতেই পারিনি।


 সকালে আবার পাখির ডাকে ঘুম ভাঙল। তাউ এক কাপ চা নিয়ে ছাদে চলে গেলাম প্রকৃতিটা দেখার জন্যে। পাহাড়ি গাছপালা আর বসন্তকাল থাকায় চারপাশের পরিবেশটা যা অপরূপ দেখাচ্ছিলো তা বলে বুঝাতে পারবোনা। চারপাশে দেখতে দেখতে বাড়ির দক্ষিণ পাশে তাকাতেই আমি থমকে গেলাম, কারণ একটা ভাঙা এবং পোড়া বাড়ি পড়ে আছে সেখানে।

চারপাশের গাছপালায় তেমন ভালো করে স্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিলোনা।  যাক একথা দারোয়ান জহির চাচাকে জিজ্ঞাসা করলেই ভলোভাবে জানতে পারবো। একথা ভাবতে ভাবতে জহির চাচার কাছে চলে গেলাম।


গিয়ে দেখি জহির চাচা নেই। কোথাও মনে হয় গিয়েছে। তাই আমিও আর অপেক্ষা না করে বাইরে হাঁটতে বের হলাম। প্রায় ১৫-২০মিনিট ওর আবার বাড়ির দিকে আসতে থাকলাম, এসময় পিছন থেকে কে যেনো আমার নাম ধরে ডাকছে। আমি অবাক হয়ে গেলাম, অবাক হওয়ারই তো কথা কারণ এখানে তো কেউ আর নেই যে আমাকে চিনবে। তাই কৌতূহলী হয়ে পিছনে তাকাতেই দেখি সে আর কেউ নয়, ছোটবেলার বন্ধু আবরাব। তাজে দেখে যেমন আমার মনরা নেচে উঠলো তেমনি মনে হয় তার মনটাও নেচে উঠেছিলো। সে আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল, 

-কিরে তুই এখানে কবে থেকে থাকিস। যাক অনেকদিন পর একজন পুরনো বন্ধু পেয়ে ভালোই লাগছে, বলে হাসতে লাগলো।

-আমিও হাসতে হাসতে হাসতে বললাম এখানে কাল এসেছি। সামনেী মোড়ের বাসায় থাকি। তুই এখানে কি করিস?


-আসলে এখানে একটা অফিসে কাজ করছি প্রায় তিন মাস হলো। একথা বলে আমার নাম্বারটা নিয়ে কাল সকালে দেখা হবে বলে চলে গেলো। আমিও বাসায় চলে এসেছি। গিয়ে দেখি জহির চাচাও এসে পরেছেন। তিনি আমাকে দেখে বললেন স্যার নাস্তা করেছেন?

-আজ্ঞে না নাস্তা করিনি, তবে আপনার সঙ্গে কিছু আমার কিছু কথা ছিলো বাড়ির দক্ষিণ পাশে একটা ভাঙা ও পুরনো বাড়ি দেখলাম, সেটার কথা তো আপনি আমাকে বললেন না?

-জহির চাচা বললেন আপনি ঠিকই দেখেছেন....wait for next part

আজ এপর্যন্তই দ্বিতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন😇

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url