যে সহে, সে রহে।অথবা, সবুরে মেওয়া ফলে ভাবসম্প্রসারণ
[ad_1]
ভাবসম্প্রসারণ:যে সহে, সে রহে।অথবা, সবুরে মেওয়া ফলে।
ভাব-সম্প্রসারণ : ধৈর্য মানুষের জীবনসংগ্রামে সাফল্যের মূলভিত্তি। জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হলে সহনশীলতা তথা ধৈর্য একান্ত প্রয়োজন । জাগতিক দুঃখ-কষ্ট, ব্যথা-বেদনা ধৈর্য সহকারে সহ্য করতে পারলেই বিজয়ের মালা গলায় পরা সম্ভব ।
মানবজীবন নিরবচ্ছিন্ন সুখের নয়। বরং জীবনের প্রতি পদে আছে ভয়-ভীতি, দ্বন্দ্ব-সংঘাত, বিপদ-আপদ ইত্যাদি । সংসার জীবনে আছে পাওয়া না পাওয়া কিংবা পেয়ে হারানোর ব্যথা, আছে শত-সহস্র লাঞ্ছনা-গঞ্জনা, নৈরাশ্যের বেদনা, পরাজয়ের দুঃসহ গ্লানি এবং দুঃখ ও শোকের মর্মান্তিক যাতনা । এর পরেও আছে জরা আর মৃত্যুর কঠিন বাস্তবতা। যেকেউ চাইলেই জীবন থেকে এগুলো পরিত্যাগ করতে পারে না। বরং এসবই জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ কিন্তু এ প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে ধৈর্য সহকারে এগিয়ে যেতে হবে; এটিই জীবনের স্বাভাবিকতা। বিপদ-বাধা, বিরুদ্ধ নানা শক্তিকে মোকাবিলা না করে জীবনের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। তাই অপরিসীম ধৈর্য বা সহনশীলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হয় জীবনের অভীষ্ট লক্ষ্যে। এখানেই পাওয়া যায় জীবনের প্রকৃত সার্থকতা । গতির আরেক নাম জীবন, সুতরাং বিশ্ব চরাচরে প্রবহমান গতির সঙ্গে ধৈর্য ধরে চলতে হবে সকল বাধার প্রাচীর অতিক্রম করে। কারণ প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াতে আছে পৌরুষের পরিচয়, আছে মনুষ্যত্বের বিস্ময়কর সার্থকতা। দুঃখ-শোকের তীব্র আঘাতেই মানুষের সুপ্ত বিবেক জাগ্রত হয়; পৃথিবীকে নতুন করে উপলব্ধি করতে শেখায় জীবন ঘষে যে স্ফুলিঙ্গ বের হয়, তাতে মানবজীবনকে চেনা যায় নতুন করে । ব্যথা-বেদনার পাহাড় অতিক্রম করেই তো পাওয়া যায় জীবনের প্রকৃত জয়। কিন্তু জীবন-যুদ্ধের এ প্রতিকূলতাকে ভয় পেয়ে বসে থাকলে জীবন মৃত্যুর দোরগোড়ায় পৌঁছে তাই বলা হয়, গতিতে জীবন, স্থিতিতেই মৃত্যু । অবশ্য বিশ্বনন্দিত বৈজ্ঞানিক ডারউইন প্রাণিজগতের মধ্যে প্রত্যক্ষ করেন যে, এই সংগ্রামময় পৃথিবীতে শুধু যোগ্যতমরাই শেষ পর্যন্ত টিকে থাকে মানবসভ্যতার ইতিহাসও এরূপ সাক্ষ্য বহন করে । সীমাহীন ধৈর্যে যারা জীবনের সকল তিক্ততাকে অমৃত বলে গ্রহণ করতে পেরেছে, তারাই সার্থক জীবনের অধিকারী । পৃথিবীতে এ রকম মানুষের দৃষ্টান্ত বিরল নয় বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশের প্রেসিডেন্ট রিগান জীবনের প্রথমে একজন বেতার ঘোষক হতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বারবার চেষ্টা সত্ত্বেও তিনি তা পারেননি; তবুও তিনি তাঁর চেষ্টা অব্যাহত | রেখেছিলেন এবং ঘোষক না হতে পারলেও সুন্দর কণ্ঠের জন্য রাজনীতিতে সাদরে প্রবেশ করতে পেরেছিলেন এবং শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হয়েছেন । সুতরাং জীবনের নানা ব্যর্থতা ধৈর্যসহকারে গ্রহণ করলে তা থেকেও জীবনের সফলতা আসতে পারে এটি নির্দ্বিধায় বলা যায় । তাই পৃথিবীর প্রতিটি ধর্মগ্রন্থেই ধৈর্য বা সহনশীলতাকে মানবজীবনের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পালনীয় বিষয় হিসেবে উল্লেখ রয়েছে।
জীবনে সফলতা অর্জনের অন্যতম চাবিকাঠি হলো ধৈর্য। আর ধৈর্যহারা বৃহৎ জগতে বাঁচতে শেখেনি । সহনশীলতা তথা ধৈর্য মানবজীবনে সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে অপরিসীম শক্তি আর সাহস যোগায় । সুতরাং মানবজীবনে সাফল্য অর্জনে অবশ্যই ধৈর্যশীল হতে হবে।
source: পুথিনি বই
এই কন্টেন্ট এর সারবস্তু গৃহীত হয়েছে © পুঁথি নিলয় বই প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিত থেকে নেওয়া হয়েছে।
[ad_2]