রাশেদ খানকে পরকীয়ার অভিযোগে গণধোলাইয়ের দাবিটি মিথ্যা

[ad_1]

সম্প্রতি “পরকীয়া করতে গিয়ে গণধোলাই খেলেন ছাত্র অধিকার পরিষদের লুচু রাশেদ মিডিয়াগুলো কই?” শীর্ষক শিরোনামে একটি ছবি সম্বলিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ফেসবুকে প্রচারিত এমন কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে। পোস্টগুলোর আর্কাইভ ভার্সন দেখুন এখানে, এখানে, এখানে, এখানে, এখানে

ফ্যাক্টচেক

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে দেখা যায়, গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে পরকীয়ার অভিযোগে গণধোলাইয়ের বিষয়টি সত্য নয় বরং ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রাশেদ খান নিজেই।

পরকীয়ার অভিযোগে রাশেদ খানকে মারধরের বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে রাশেদ খানের ফেসবুক পেজে “নেত্রকোনায় আবারও রাশেদ খান, হাসান আল মামুন, মাহফুজ, মনজুর মোর্শেদ, আতা, ইয়ামিনসহ নেতৃবৃন্দের উপর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওনের নেতৃত্বে হামলা” শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি ফেসবুক লাইভ (আর্কাইভ) খুঁজে পাওয়া যায়। 

ভিডিওটিতে রাশেদ খান অভিযোগ করেন, “নেত্রকোনায় দুপুরে একবার আমাদের ওপর হামলার চেষ্টা করা হয়। রাতে আবারও মামুনের বাড়িতে ঢুকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওনের নেতৃত্বে হামলা হয়। তারা এসে বলতে থাকে, রাশেদ কেন নেত্রকোনায় আসলো? ওকে আজকে লাশ বানিয়ে ফেলা হবে। এ সময় তারা আমাকে তুলে নিয়ে যেতে চায়। তাদের প্রতিহত করতে গিয়ে রডসহ লাঠিশোটার আঘাতে হাসান আল মামুন, মাহফুজ, মনজুর মোর্শেদ, আতা, ইয়ামিনসহ আমাদের অনেকে আহত হয়েছে।

এছাড়া বেসরকারি টেলিভিশন বাংলা ভিশনের ওয়েবসাইটে ২৬ সেপ্টেম্বর “নেত্রকোনায় গিয়ে রাশেদসহ গণ অধিকার নেতারা অবরুদ্ধ” শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনটিতে গণ অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হানিফকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, “ছাত্র অধিকার পরিষদ এর সাবেক  আহবায়ক হাসান আল মামুন কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যায়। সাথে গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খানসহ অনেকেই ছিলো। নেত্রকোনার মদনপুর বাজারে পৌঁছালে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির নেতৃত্বে হামলা করার চেষ্টা করে এসময় তাদের কয়েকজনকে কিল ঘুষি দেয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীদের নিয়ে হাসান আল মামুন তাদের বাড়িতে চলে যায়, কিছুক্ষণ পর বাড়িতে এসেও ছাত্রলীগের নেতারা হুমকি দিয়ে যায়।

পরবর্তীতে বিষয়টির অধিকতর সত্যতা যাচাইয়ে রিউমর স্ক্যানার টিম নেত্রকোনা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। 

তিনি রিউমর স্ক্যানারকে জানান, “রাশেদ খানের পরকীয়ায় ধরা পড়ার বিষয়টি সঠিক না। পাশাপাশি জেলা ছাত্রলীগ যে আক্রমণ করেছে সেটাও সঠিক না। তবে জেলা ছাত্রলীগের ছেলেরা সেখানে গিয়েছিল। তখন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে৷ আমি তাদেরকে বলেছি, এদের উপর আক্রমণ করলে এরা সারা দেশে একটা ইস্যু তৈরি করবে। আমি ওদেরকে বুঝাতে সক্ষম হই, এরা এমন কিছু করে নাই।

অপরদিকে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মারধরের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “ওদেরকে কোনো মারধর করা হয়নি৷ মদনপুর ইউনিয়নে আমাদের একটা প্রোগ্রাম ছিল, আমরা সেখানে গিয়েছিলাম। এটাকে ঘিরেই গণ অধিকার পরিষদের ওরা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

মূলত, ছাত্র অধিকার পরিষদ এর সাবেক আহবায়ক হাসান আল মামুন কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে গতকাল তার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় যায়। তার সাথে গণঅধিকার পরিষদ এর যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ খান সহ অনেকেই ছিলো। এসময় তাদের উপর ছাত্রলীগ থেকে হামলা করার অভিযোগ করে গণ অধিকার পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এছাড়া একইদিন রাতে ফেসবুক লাইভে আবারও মামুনের বাড়িতে ঢুকে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাওনের নেতৃত্বে হামলার অভিযোগ করেন গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান। এই ঘটনাটিকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাশেদ খান পরকীয়ায় ধরা পড়ার দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে। 

তবে, নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার শাকের আহমেদ ‘রাশেদ খানের পরকীয়ায় ধরা পড়ার বিষয়টি’ সঠিক নয় বলে রিউমর স্ক্যানারকে নিশ্চিত করেছেন। 

সুতরাং, গণ অধিকার পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানকে পরকীয়ার অভিযোগে গণধোলাইয়ের শিকার হওয়ার ঘটনাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। 

তথ্যসূত্র

[ad_2]

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url