ইন্টারনেটের তথ্য সম্পর্কে সন্দেহ করা ও তা যাচাইয়ের প্রাথমিক উপায়

[ad_1]

ইন্টারনেট হলো তথ্যের ভান্ডার। কিন্তু ইন্টারনেটে পাওয়া সব তথ্য সবসময় সত্য হয়না। এখানে যেমন সত্য তথ্য আছে তেমনি প্রচুর ভুল এবং মিথ্যা তথ্যও রয়েছে। অজস্র তথ্যের মধ্যে থেকে সত্য ও মিথ্যা তথ্য বাছাই করা অনেকাংশেই কঠিন। গণমাধ্যম-ই যেখানে ভুল তথ্য কিংবা যাচাই ব্যতীত তথ্য প্রকাশ করে সেখানে ব্যবহারকারী কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত তথ্য সম্পর্কে একদম নিশ্চিত না হলে সন্দেহ প্রবণ হওয়াই যায়। এতে বরং ভুল তথ্য এবং এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচা সম্ভব।

তবে মিমস, ট্রল, হাস্যরস বা কৌতুক বিষয়বস্তু। কোনও প্রেক্ষাপট বা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যৎবাণী বা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলা কথা, মুদ্রণে অনিচ্ছাকৃত ভুল, বানান ভুল ও বক্তব্যে সাধারণ ভুল। এছাড়াও ধর্ম বিষয়ক বিতর্কিত তথ্য অলৌকিক ঘটনার তথ্য যাচাইযোগ্য নয় এবং এ জাতীয় তথ্যের ক্ষেত্রে সন্দেহ করা যায়না। বাকি সকল ক্ষেত্রেই সামনে পাওয়া তথ্যের বিষয়ে সন্দেহ করা যাবে।

ভুল তথ্য কেন এত বিপজ্জনক

২০২০ সালে করোনা ভাইরাস মহামারী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে গ্রাস করেছিল, ফলে ৫০০,০০০ এরও বেশি মৃত্যু হয়েছিল। পরবর্তীতে এটি সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ে এবং ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ মহামারীতে পরিণত হয়।

কিন্তু ২০২০ সালের শুরুর দিকে ফেসবুক, ব্লগ পোস্ট, ইনস্টাগ্রাম ছবি এবং ইউটিউব ভিডিও দ্বারা মিথ্যাভাবে দাবি করা হয়েছিল যে কোভিড-১৯ একটি প্রতারণা। এই সময়টাই ছিল ভুল তথ্যের মহামারী শুরুর সময়। কোভিড-১৯ সম্পর্কিত ভুল তথ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বব্যাপী মহামারী থেকে উত্তোরণের ক্ষেত্রে ব্যপক নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল।

মিসইনফরমেশন ও ডিসইনফরমেশনের মধ্যে পার্থক্য

  • মিসইনফরমেশন বা ভুল তথ্য হলো এমন মিথ্যা তথ্য যা উদ্দেশ্য নির্বিশেষে শেয়ার করা হয়। অর্থাৎ মিসইনফরমেশন ছড়ানোর পেছনের উদ্দেশ্য যাচাই করা যায়না। যিনি মিসইনফরমেশন ছড়াচ্ছেন তিনি নির্দিষ্ট কোনও উদ্দেশ্যে অথবা না জানেই (উদ্দেশ্য ছাড়া) ছড়াচ্ছেন।
  • ডিসইনফরমেশন বা কুতথ্য হলো এমন মিথ্যা তথ্য যা বিভ্রান্তির উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয় অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে শেয়ার করা হয়।
Collected Screenshot

ইন্টারনেটে পাওয়া তথ্য সম্পর্কে সন্দেহ করা

ইন্টারনেটে কোনও তথ্য সম্পর্কে সন্দেহ করা কিংবা তথ্যটি শেয়ার করার আগে যাচাই করার জন্য কিছু স্পষ্ট সংকেত রয়েছে। পয়েন্টার ইন্সটিউট অনুযায়ী এগুলোকে রেডফ্ল্যাগ বলা হয়।

  • ইন্টারনেটে পাওয়া কোনও তথ্য তথ্য যদি দৃঢ় অনুভূতি তৈরি করে, বিশেষ করে বিস্ময় বা বিতৃষ্ণা – তাহলে তথ্যটি যাচাই শেয়ার করার আগে যাচাই করতে হবে।
  • ইন্টারনেটে পাওয়া এমন কিছু যা আপনার মতামত বা ওয়ার্ল্ডভিউ এর সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হয় এবং তথ্যটি সত্য হলে খুব ভাল হয়। এজাতীয় তথ্য শেয়ার করার আগে যাচাই করতে হবে।
  • কোনো তারিখ বা লেখক (অথর) উল্লেখ ব্যতীত তথ্য বা নিবন্ধ মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। 
  • যদি কোনও তথ্য এমন একটি অ্যাকাউন্ট থেকে পাওয়া যে একাউন্টটির মালিকক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়না (অথবা ভেরিফাইড নয়)। যাচাই না করা অ্যাকাউন্টগুলো ফেইক হতে পারে এবং কোনওক্ষেত্রে ভুল তথ্য ছড়ানোর জন্য একজন রাজনীতিবিদ বা সেলিব্রিটির ছদ্মবেশ ধারণ করতে পারে৷ 

বিঃদ্রঃ কিন্তু, কারও প্রোফাইল ভেরিফায়েড (একটি নীল চেকমার্ক) থাকার অর্থ এই নয় যে তারা যা পোস্ট করছে সে বিষয়ে তারা বিশেষজ্ঞ। সেক্ষেত্রে তাদেরও ভুল পরিলক্ষিত হতে পারে।

Collected image

তথ্য যাচাইয়ের প্রাথমিক প্রক্রিয়া

পয়েন্টার ইন্সটিউট অনুযায়ী (স্ট্যানফোর্ড হিস্ট্রি এডুকেশন গ্রুপ উদ্ভাবিত) ইন্টারনেটে কোনও তথ্য যাচাই করতে হলে প্রাথমিকভাবে তথ্যটি সম্পর্কে তিনটি প্রশ্ন করতে হবে। তিনটির মধ্যে কোনও একটি কিংবা অধিকাংশ উত্তর যদি বিভ্রান্তিকর কিংবা অসত্য মনে হয়; তাহলে প্রাথমিকভাবে তথ্যটিকে মিথ্যা তথ্য হিসেবে শনাক্ত করা যায়।

  • তথ্যটি কে শেয়ার করেছে বা তথ্যের নেপথ্যে কে এবং বিশ্বাসযোগ্যতার হিসেবে তার পূর্ববর্তী অবস্থান কেমন?
  • তথ্যসূত্র উল্লেখ করা হয়েছে? উল্লেখ করা হলে তথ্যসূত্র হিসেবে কী ব্যবহার করা হয়েছে বা তথ্যটির প্রমাণ কি? তথ্যসূত্র পরিচিত কোনও মাধ্যম নাকি অপরিচিত?
  • আলোচিত তথ্য সম্পর্কে সমজাতীয় অন্যান্য সূত্র কি বলছে বা এই তথ্যটি সম্পর্কে অন্যান্য সোর্সে কী উল্লেখ রয়েছে?

পয়েন্টার ইন্সটিউট অনুযায়ী এই পদ্ধতিতে প্রাথমিক ধারণা থেকে তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত না হওয়া গেলে আরও চারটি পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে।

  • ল্যাটারাল রিডিং বা বিষয়বস্তু ও তথ্যসূত্র সম্পর্কে অনলাইনে বিভিন্নভাবে সার্চ করা
  • ক্লিক রেসট্রেইন্ট এন্ড আপস্ট্রিম বা তথ্যের লিংকে ক্লিক না করে তথ্যের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালোভাবে খেয়াল এবং রিসার্চ করা
  • তথ্য খুঁজতে আরও কার্যকরভাবে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করা
  • ছবি বা ভিডিওর ক্ষেত্রে “রিভার্স ইমেজ সার্চ” পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুসন্ধান করা
Collectedc Image

১. ল্যাটারাল রিডিং বা বিষয়বস্তু সম্পর্কে অনলাইনে সার্চ করা

এই পদ্ধতিতে প্রথমেই আপনার ব্রাউজারে কতগুলো ট্যাব বা নতুন পৃষ্ঠা ওপেন করুন। সেসকল ট্যাবে যে তথ্য বা সংবাদটি যাচাই করতে চাচ্ছেন সেই তথ্যটির ব্যাপারে ইন্টারনেটে সার্চ করে প্রাসঙ্গিক কিছু পাওয়া যায় কিনা তা দেখতে হবে। তথ্য বা সংবাদের বিষয়বস্তু, তথ্যসূত্র, সময় , ঘটনা, নাম কিংবা কি-ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন অনুসঙ্গ নিয়ে বিভিন্ন ট্যাবে সার্চ করতে পারেন

২. ক্লিক রেসট্রেইন্ট এন্ড আপস্ট্রিম বা সার্চ রেজাক্টের লিংকে ক্লিক করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা, তথ্যের বিষয়বস্তু সম্পর্কে ভালোভাবে খেয়াল এবং রিসার্চ করা

গুগল কিংবা যে কোনও সার্চ ইঞ্জিনে কাঙ্ক্ষিত তথ্যের বিষয়ে সার্চ করলে প্রথমে যে রেজাল্ট পাওয়া যাবে তাতে সাথে সাথেই ক্লিক করা যাবেনা। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সার্চ ইঞ্জিন প্রথমে সমজাতীয় আর্টিকেলের বিজ্ঞাপন লিংকগুলো প্রথমে দেখায়, বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে লিংকগুলো অথেনটিক নাও হতে পারে। এছাড়াও বাকি সার্চ রেজাল্টেও ক্লিক করার আগে ওয়েবসাইটটি খেয়াল করতে হবে, কি-ওয়ার্ড খেয়াল করতে হবে। উপযুক্ত ও প্রাসঙ্গিক হলে তবেই সেই লিংকে ক্লিক করতে হবে।
এর বাইরে সংবাদের শিরোনাম, ক্যাটাগরিসহ  বিভিন্ন বিষয় ভালোভাবে লক্ষ্য করলে সংবাদের সত্যতার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়। যেমনঃ-

# শিরোনামে বিস্ময়সুচক চিহ্ন আছে কিনা যাচাই করা

অধিকাংশ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমে ধারণাভিত্তিক (যা সাধারণত সত্য হয়না) এবং বিভ্রান্তিকর তথ্যের শেষে বিস্ময়সূচক (!) চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। এর মাধ্যমে বিষয়টির বা শিরোনামের প্রতি মনযোগ আকর্ষণ করা হয়। শিরোনামে বিস্ময়সূচক (!) চিহ্ন থাকলে খবরটি কেবলমাত্র ধারণাভিত্তিক বা সন্দেহভিত্তিক সংবাদ হতে পারে। এজাতীয় সংবাদ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সত্য হয়না

# স্যাটায়ার বা ব্যাঙ্গাত্বক ক্যাটগরি যাচাই

অনেকসময় গনমাধ্যমের স্যাট্যায়ার/ ব্যাঙ্গাত্বক কিংবা কৌতুক ক্যাটাগরির সংবাদ অনেকেই সত্য হিসেবে বিশ্বাস করে। এসকল ক্ষেত্রে সংবাদের ক্যাটাগরি কিংবা গণমাধ্যম কর্তৃক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের ক্ষেত্রে তাদের ক্যাপশনের লেখা খেয়াল করতে হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্যাপশনে স্যাট্যায়ার বা কৌতুক শব্দটি উল্লেখ থাকে।

# গণমাধ্যমের অফিশিয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একাউন্ট থেকে সংবাদ বা তথ্য পোস্টের ক্ষেত্রে পোস্ট ক্যাপশন খেয়াল করা

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ও পাঠকের সাথে নিরবিচ্ছিন্নভাবে যুক্ত থাকতে অনেকসময় গণমাধ্যমের অফিশিয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম একাউন্ট থেকে পুরোনো পোস্ট নতুন করে পুনরায় শেয়ার করা হতে পারে। কিংবা সমসাময়িক বিষয় নিয়ে স্যাট্যায়ার/ ব্যাঙ্গাত্বক কিংবা কৌতুক ক্যাটাগরির সংবাদ প্রকাশ করতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা সামাজিক যগাযোগ মাধ্যমের পোস্টের ক্যাপশনে থ্রোব্যাক/ throwback, ব্যাঙ্গাত্বক ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে স্যাট্যায়ার/ Satire বা কৌতুক/fun শব্দগুলো উল্লেখ করে থাকে।

# সংবাদ বা তথ্যের ইউআরএল এবং সংবাদের বানানসহ গঠনগত দিক খেয়াল করা

পরিচিত সংবাদমাধ্যমের ওয়েবসাইটের এর মতো ডিজাইন করে ইউআরএল বা ওয়েবসাইটের নামে কিছু বর্ণে সামান্য পরিবর্তন এনে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে অনেক সময় বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারিত হয়। এক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমের প্রকৃত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংবাদটি সেখানে আছে কিনা যাচাই করতে হবে। ইউআরএল বা ওয়েবসাইটের নামের দিকে খেয়াল করতে হবে। সংবাদের শিরোনাম ও বিস্তারিত অংশের লেখায় গঠনগত ভুল, বানানে ভুল পাওয়া গেলে কিংবা মুলধারার সংবাদমাধ্যমের মত পেশাদারিত্বের ছাপ না পাওয়া গেলে সেসকল সাইটের তথ্য ও সংবাদ সাধারনত মিথ্যা কিংবা উদ্দেশ্যপ্রোণোদিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

#  অতিরঞ্জিত তথ্য

সাধারনত ভুঁইফোড় সাইতগুলোতে তথ্য অতিরঞ্জিত করে লেখা থাকে।  অতিরঞ্জিত করে প্রকাশ করা খবরও সাধারণত বিভ্রান্তিকর হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে তথ্যটি বা তথ্যের উৎসটির পুর্বের প্রকাশিত সংবাদ, সংবাদে উৎসের বিন্যাস অস্বাভাবিক কিনা সেটি যাচাই করতে হবে।

# বিশ্বাসযোগ্য সংবাদমাধ্যমে নজর রাখা

ইন্টারনেটে প্রচারিত তথ্য বা গল্পগুলো যদি দেশীয় মূলধারার একাধিক গণমাধ্যম কিংবা স্থানীয় বিশ্বাসযোগ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত না হয় তবে সেটি মিথ্যা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সবসময় শুধু শিরোনাম পড়েই তথ্য/ সংবাদ সম্পর্কে ধারণা করা যায়না, বিস্তারিত অংশও পড়তে হয়। তথ্যটি প্রকাশের প্রাসঙ্গিকতার দিকেও খেয়াল করতে হয়।

বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে  সংবাদ বা তথ্যের লিংকে ক্লিক না করে রিসার্চে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়া গেলে কি করবেন?

# সংবাদে উল্লেখিত তথ্যসূত্রে তথ্য খোঁজা এবং তথ্যসূত্রের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করা

তথ্য বা সংবাদে ব্যবহৃত তথ্যসূত্র যাচাই করতে উক্ত সূত্রের সোশ্যাল মিডিয়া একাউন্ট ও ওয়েবসাইট পরিদর্শন করে নিশ্চিত হতে হবে যে সূত্রটি বিশ্বাসযোগ্য কি না। এছাড়াও আদৌ উল্লিখিত তথ্যটি সেখানে পুর্বে প্রকাশিত হয়েছে কিনা। অনেকক্ষেত্রে যে সূত্র উল্লেখ করা হয় সেটিও।

# সংবাদে তথ্যসূত্র উল্লেখ না থাকলে

গুরুত্বপুর্ণ সংবাদে বা তথ্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কিংবা অন্য কোনও সূত্রের কথা উল্লেখ না থাকলে সে-সকল তথ্য বা সংবাদ মিথ্যা বা ধারণাভিত্তিক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। স্পষ্ট করে সোর্স বা তথ্যসুত্রের না উল্লেখ করতে না পারলেও অন্তত ইংগিত বা নির্দেশনা থাকবে।

# তারিখ যাচাই

কোন অতিরঞ্জিত সংবাদ নজরে আসলে প্রথমে সেটি প্রকাশের তারিখ যাচাই করতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে বেশ পুরনো সংবাদ নতুন করে প্রকাশ করা হয়। এতে পাঠক মনে করে ঘটনাটি সম্প্রতি ঘটেছে।   এক্ষেত্রে যেকোনো সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে সংবাদটির শিরোনাম সার্চ করে হুবহু একই তথ্যের কোনও গ্রহণযোগ্য মাধ্যমে পুরোনো সংবাদ আছে কিনা সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

# শিরোনামের সাথে বিস্তারিত অংশের অমিল থাকা

অনেক ক্ষেত্রে ভুঁইফোড় সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে মনযোগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে ঘুরিয়ে কিংবা পুরপুরি মিথ্যা লেখা হয়, কিন্তু বিস্তারিত অংশে সঠিকভাবে তথ্য উল্লেখ করা হয়। তাই শুধুমাত্র শিরোনাম পড়েই তথ্য/ সংবাদ সম্পর্কে ধারণা করা যাবেনা, বিস্তারিত অংশও পড়তে হবে।

# বিনোদন সংবাদে তারকাদের ঘটনার সংবাদ বিস্তারিত পড়ুন

বিনোদন ক্যাট্যাগরির সংবাদে তারকাদের ঘটনার খবর শুধুমাত্র শিরোনাম পড়েই সিদ্ধান্ত নেয়া যাবেনা। হতে পারে ঘটনাটি তার অভিনীত একটি নাটকের দৃশ্যের বর্ণণা মাত্র। তাই এজাতীয় নিউজের ক্ষেত্রেও  বিস্তারিত অংশ অবশ্যই পড়তে হবে।

৩. তথ্য খুঁজতে আরও কার্যকরভাবে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করা

গুগলে তথ্য খুঁজতে প্রাথমিক সার্চ কার্যক্র না হলে গুগল এডভান্স সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে গুগল ডর্কিং পদ্ধতিও ব্যবহার করা যেতে পারে। পাশাপাশি গুগল ব্যতীত অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনও ব্যবহার করা যেতে পারে। জিওলোকেটিং এর ক্ষেত্রে গুগল ম্যাপসও ব্যবহার করা যেতে পারে।

৪. ছবি বা ভিডিওর ক্ষেত্রে “রিভার্স ইমেজ সার্চ” পদ্ধতি ব্যবহার করে অনুসন্ধান করা

গুগল সার্চের পাশাপাশি ছবি ও ভিডিও যাচাইয়ের ক্ষেত্রে রিভার্স ইমেজ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। গুগল ইমেজ সার্চ, ইয়ানডেক্স ইমেজ সার্চ কিংবা টিনআই নামক কিছু টুলস ব্যবহার করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা যায়।

কি কি বিষয়ের ফ্যাক্টচেক হয়না

তথ্য যাচাইয়ের নানা পদ্ধতি ও টুলস উন্মোচিত হলেও সব তথ্য যাচাইযোগ্য নয়। যেমনঃ

  • মিমস, ট্রল, হাস্যরস বা কৌতুক বিষয়বস্তু। সাধারণ ধারণা অনুযায়ী মিমস এর তথ্য বানোয়াট হয়ে থাকে।
  • কোন প্রেক্ষাপট বা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভবিষ্যৎবাণী বা আশাবাদী যা স্বভাবতই যাচাইযোগ্য নয়।
  • মুদ্রণে অনিচ্ছাকৃত ভুল, বানান ভুল ও বক্তব্যে সাধারণ ভুল (slip of tongue)।
  • বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া ফ্যাক্টচেক অনুরোধের বিষয়বস্তু সম্পর্কে যথাযথ সূত্রের অস্তিত্ব না পাওয়া গেলে।
  • ধর্ম বিষয়ক ফ্যাক্টচেকের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ধর্মের তথ্যসূত্র বিতর্কিত হলে ফ্যাক্ট চেক করা হয় না।
  • অলৌকিক ঘটনার তথ্য বা দাবী যাচাইযোগ্য নয়।

সুতরাং, যে সকল বিষয়ের ফ্যাক্ট-চেক হয়না সেই বিষয়গুলো ব্যতীত বাকি সকল প্রকার তথ্যের ক্ষেত্রে আমদের সন্দেহ করতে হবে। এরপরে প্রাথমিক যাচাইয়ের মাধ্যমে কিংবা প্রাথমিক যাচাই পদ্ধতিতে সমাধান না পাওয়া গেলে পরবর্তী প্রক্রিয়াগুলো অনুসরণ করে তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তারপর সেগুলো বিশ্বাস কিরা কিংবা শেয়ার করতে হবে। তথ্যের সঠিকতা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তা বিশ্বাস করা ও ছড়িয়ে দেয়া উচিত নয়।

[ad_2]

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url